ভারতে করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর নতুন রেকর্ড

  • প্রকাশিতঃ
  • ৮ মে, ২০২১ ২:৩৩ অপরাহ্ণ

বিশ্বজুড়ে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতে এ রোগে মৃত্যুর হিসেবে নতুন রেকর্ড করেছে ভারত। শুক্রবার দেশটিতে মারা গেছেন ৪ হাজার ১৮৭ জন করোনা রোগী। ভারতের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ও আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যানগুলোর তথ্য বলছে, গত বছর মহামারি শুরুর পর থেকে কোনো দেশে এই রোগে একদিনে এর আগে এত বেশি সংখ্যক মৃত্যু হয়নি।

শনিবার (৮ মে) ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে মারা গেছেন ৪ হাজার ১৮৭ জন করোনা রোগী, আর এ রোগে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে  ৪ লাখ ১ হাজার ৩২৬ জনে। দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ৩৭ লাখ ২৩ হাজার ৪৪৬ জন।

ভারতে গত মার্চ থেকে বাড়ছে করোনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগোচ্ছে করোন রোগীদের মৃত্যুর তালিকা। মার্চের প্রথম সপ্তাহে ভারতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৫ হাজারের কিছু বেশি।

কিন্তু অবস্থার দ্রুত অবনতি হওয়া শুরু করে মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই। সে সময় থেকে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা দুই লাখের কাছাকাছি পৌঁছে যায় দেশটিতে; মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ নাগাদ সেই সংখ্যা পৌঁছে যায় প্রায় তিন লাখের কোঠায়।

এপ্রিলেও অব্যাহত ছিল দৈনিক আক্রান্তের এই উচ্চহার। গত ৩০ এপ্রিল প্রথমবারের মত দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা চার লাখ অতিক্রম করে ভারতে। তারপর কয়েকদিন এই সংখ্যা কিছুটা কম থাকলেও গত তিন দিন ধরে টানা ৪ লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন দেশটিতে। 

এর মধ্যে শুধু এপ্রিল মাসেই ৬৬ লাখ মানুষ নতুন আক্রান্ত রোগীর তালিকায় নাম লিখিয়েছেন।

লাগামহীন এই সংক্রমণ পরিস্থিতিতে নানামূখী বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে ভারত। সবচেয়ে সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। অনেক রাজ্যের হাসপাতালগুলোয় শয্যার সংকট দেখা দেওয়ায় চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না সেখানকার করোনা রোগীরা। বাড়িতে থেকে প্রায় বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন তাদের অনেকেই।

আবার হাসপাতালগুলোতে ভর্তি থাকা রোগীরাও যে যথাযথ চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন, তা ও নয়। ভারতের অধিকাংশ হাসপাতালে শয্যার সংকটের পাশাপাশি ভয়াবহভাবে দেখা দিয়েছে মেডিকেল অক্সিজেন, করোনা চিকিৎসায় ব্যবহার্য ওষুধ ও অন্যান্য মেডিকেল উপকরণের ঘাটতি। মেডিকেল অক্সিজেনের অভাবে গত দুই সপ্তাহে দিল্লি ও কর্নাটকের একাধিক হাসপাতালে বেশ কয়েকজন চিকিৎসাধীন রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

গত ১৬ জানুয়ারি থেকে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে ভারত। চলমান সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নয়নে টিকার ওপর জোর দিতে চাচ্ছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার; কিন্তু সেখানেও দেখা দিয়েছে সংকট। মহারাষ্ট্র, দিল্লি, ছত্তিশগড়সহ বেশ কিছু রাজ্য ইতোমধ্যে জানিয়েছে, টিকার ডোজের ঘাটতি চলার কারণে অনেক এলাকায় গণটিকাদান কর্মসূচি বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছে রাজ্য সরকারগুলো।

দৈনিক সংক্রমণে লাগাম টানতে ইতোমধ্যে লকডাউন জারি করেছে দিল্লির রাজ্য সরকার, কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে মহারাষ্ট্র। শুক্রবার (৭ মে) লকডাউন জারি করেছে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় দুই রাজ্য তামিলনাড়ু ও কর্নাটক।

ভারতে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি, কেরলায়। তখন থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ২ কোটি ১৮ লাখ ৮৬ হাজার ২১৮ জন এবং এ রোগে এখন পর্যন্ত সেখানে মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৩৮ হাজার ২৬৫ জনের।

বিডিনিউজ ট্র্যাকার

সম্পাদনাঃ ডেস্ক

Related Posts

  • নভেম্বর ২৯, ২০২৩
  • 61 views
ঢাকায় আসছে ইইউর বিশেষজ্ঞ দল

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ঢাকায় আসছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) একটি কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল।বুধবার (২৯ নভেম্বর) তাদের ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে বলে…

Read more

  • জুলাই ১০, ২০২৩
  • 46 views
ন্যাটো সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠক করবেন এরদোয়ান-বাইডেন

লিথুনিয়ায় আসন্ন ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে সাক্ষাত করবেন। রোববার তুরস্কের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এ…

Read more

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You Missed

দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে কাজ করছে ড. ইউনূস সরকার

দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে কাজ করছে ড. ইউনূস সরকার

সংবাদ সম্মেলন করে ১০ দফা দাবি সাদপন্থিদের

সংবাদ সম্মেলন করে ১০ দফা দাবি সাদপন্থিদের

এক্সপ্রেসওয়েতে দুই গাড়ির সংঘর্ষ, নিহত ১

এক্সপ্রেসওয়েতে দুই গাড়ির সংঘর্ষ, নিহত ১

দক্ষিণ আফ্রিকাকে হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় ফেলে পাকিস্তানের ইতিহাস

দক্ষিণ আফ্রিকাকে হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় ফেলে পাকিস্তানের ইতিহাস

বিসিএস তথ্য ক্যাডারের বঞ্চিতদের মানববন্ধন আজ

বিসিএস তথ্য ক্যাডারের বঞ্চিতদের মানববন্ধন আজ

বিকেলে চালু হচ্ছে মোবাইল ইন্টারনেট

বিকেলে চালু হচ্ছে মোবাইল ইন্টারনেট