খালেদ মাহমুদ সুজন যেভাবে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের জাতীয় চাচায় পরিণত হয়েছিলেন এ নিয়ে কৌতুহলের শেষ নেই। খালেদ মাহমুদ বাংলাদেশের ক্রিকেটের এক অবিস্মরণীয় নাম। খালেদ মাহমুদ বিশ্বকাপে পাকিস্তান বধের জন্য আলোচিত হন। খালেদ মাহমুদ সুজন বলে পেস কম থাকার জন্য সমালোচিত হন। খালেদ মাহমুদ দলে ঐক্য আনতে আলোচিত হন। বাংলাদেশের অনূর্ধ-১৯ দলের বিশ্বকাপ জয়ের জন্যও প্রশংসিত হন। খালেদ মাহমুদ কিভাবে সবার চাচা হয়েছিলেন তা নিয়ে বিডিনিউজ ট্র্যাকারের পাঠকদের জন্য লিখেছেন – আকিফ মাহমুদ।
আপনি যদি বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের আশেপাশে একটু ঘোরাঘুরি করেন তাহলে সুজনের চেহারাটা দেখা গেলেই দেখবেন, ‘চাচা’ বলে একটা চিৎকার শোনা যাচ্ছে।
হ্যা, খালেদ মাহমুদ সুজন হলেন বাংলাদেশের সব ক্রিকেটারের বয়স-প্রজন্ম নির্বশেষে “কমন” চাচা।
তো সুজন কিভাবে এই “চাচা” উপাধি পেয়েছিলেন?আশির দশকের শেষ দিকে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের মাধ্যমে উঠে এসেছিলেন একজন তরুণ প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান হালিম শাহ্। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে এক প্রকার “স্টার” হয়ে উঠেছিলেন এই হালিম শাহ্। তিনি ছিলেন হাবিবুল বাশার সুমনদের সমসাময়িক ক্রিকেটার।
২০০০-২০০১ সিজনে ঢাকা মেট্রোপলিসের হয়ে জাতীয় লীগে অভিষেক হয়েছিল হালিম শাহ্র, একই দলে একই সাথে অভিষিক্ত হন খালেদ মাহমুদ সুজন। দুজনই পরে খেলেছেন ঢাকা বিভাগের হয়ে। তাদের সাথে পরে যুক্ত হয়েছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল এবং আরো অনেক তারকা ক্রিকেটার।
এই হালিম শাহ্ একদিন আবিষ্কার করলেন খালেদ মাহমুদ সুজন তার দুঃসম্পর্কের চাচা হন, সেই থেকে হালিম শাহ্ মাঠের ভেতর এবং বাইরে “চাচা” ডাকা শুরু করেন, তার দেখাদেখি আশরাফুল এবং অন্য ক্রিকেটাররাও সুজনকে চাচা ডাকতে শুরু করলেন। স্বভাবেও একটু রাগী অভিভাবক ধরনের ভূমিকা পালন করতেন মাঠে।
সেই থেকে সুজন “চাচা”, সুজন হালিমের চাচা, ক্রিকেটের চাচা, ক্রিকেটারদের চাচা। সুজনের সেই ভাতিজা হালিম শাহ্ অবশ্য শুরুর দিকের সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেননি সিনিয়র পর্যায়ের ক্রিকেটে। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ৪০ ম্যাচে ব্যাট হাতে ২৫.৫৫ গড়ে করেছেন ১৪৮২ রান। সাত ফিফটির পাশাপাশি করেন দুটি সেঞ্চুরি। বরিশাল বিভাগের হয়ে ক্যারিয়ার সেরা ১৬১* রান করেছিলেন।
হালিম শাহ্ ২০০৫ সালে ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছিলেন। তবে তার চাচা সুজন অবসর নিয়েছিলেন তারও এক বছর পরে অর্থাৎ ২০০৬ সালে।