২০২২ কাতার বিশ্বকাপে এরই মধ্যে তিনি করেছেন সর্বোচ্চ ৫ গোল। ফ্রান্সের তরুণ ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপ্পেকে নিয়ে মাতামাতি, আলোচনার শেষ নেই। আলোচনা হচ্ছে প্রতিপক্ষ শিবিরগুলোতেও। এই মুহূর্তে এমবাপ্পেকে সবচেয়ে বেশি ভাবছে ইংল্যান্ড। কোয়ার্টার ফাইনালে হ্যারি কেইনদের ইংল্যান্ড মুখোমুখি হবে এমবাপ্পের ফ্রান্সের। স্বাভাবিকভাবেই ১০ ডিসেম্বরের সেই ম্যাচকে সামনে রেখে প্রতিপক্ষ ফ্রান্সকে নিয়ে ইংলিশরা গবেষণা-পর্যালোচনায় ব্যস্ত। ফরাসিদের রুখতে আঁটছে নানা ছক। তবে ইংল্যান্ড কোচ গ্যারেথ সাউথগেট ও তার কোচিং সহকারীদের সবচেয়ে বড় টেনশনটা এমবাপ্পেকে নিয়েই।
ফ্রান্সের ২৩ বছর বয়সি এই তরুণকে কীভাবে রুখে দেওয়া যায়, সেই সূত্র খুঁজে খুঁজে হয়রান সাউথগেট ও তার সহকারীরা। রাতের ঘুম হারাম করে গবেষণা চালিয়ে এমবাপ্পেকে আটকানোর একটা সূত্র খুঁজেও পেয়েছে তারা। ২০১২ সালের উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের যে ছকে লিওনেল মেসিকে বোতলবন্দি রাখতে সক্ষম হয়েছিল ইংলিশ ক্লাব চেলসি, এমবাপ্পেকেও সেই ছকেই বেঁধে ফেলতে চাচ্ছে ইংলিশরা। খুঁজে খুঁজে মেসির ক্ষেত্রে ব্যবহার করা ১০ বছর আগের সেই ছক বা কৌশলটা বের করেছেন সাউথগেটের সহকারী স্টিভ হল্যান্ড।
২০১১-১২ মৌসুমে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে মেসির বার্সেলোনার মুখোমুখি হয় চেলসি। সেমির দুই লেগেই মেসিকে বোতলবন্দি করে রাখতে সক্ষম হয় চেলসির রক্ষণভাগ। নিজেদের মাঠের প্রথম লেগে ১-০তে জেতা চেলসি বার্সেলোনার মাঠে গিয়ে ড্র করেছিল ২-২ গোলে। দুই মিলিয়ে ৩-২ অগ্রগামিতা নিয়ে ফাইনালে উঠে যায় চেলসি। পরে বায়ার্ন মিউনিখকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নও হয় ইংলিশ ক্লাবটি। চেলসির সেই সাফল্যের মূলে ছিল অপ্রতিরোধ্য মেসিকে পুরোপুরি নজরবন্দি করে রাখা। দুই লেগের একটিতেও মেসি গোল করতে পারেননি। মজার ব্যাপার হলো, চেলসির তত্কালীন অন্তর্বর্তী কোচ রবার্তো ডি মাতেও মেসিকে বোতলবন্দি রাখার কৌশলটা ধার করেছিলেন হোসে মরিনহোর কাছ থেকে। মরিনহো তখন রিয়াল মাদ্রিদে ছিলেন। রিয়ালের কোচ হিসেবে মরিনহো মেসিকে রুখে দেওয়ার খুব ভালো একটা কৌশলই আবিষ্কার করেছিলেন। মরিনহোকে ফোন করে মাতেও সেই কৌশলই ধার করেন। ইংলিশ কোচ সাউথগেটের সহকারী স্টিভ হল্যান্ড তখন ছিলেন চেলসিতে। ফলে কৌশলটা জেনে যান তিনিও।
শিখে রাখা সেই কৌশলটা এত বছর পর এমবাপ্পের ক্ষেত্রেও কাজে লাগাতে চাইছেন হল্যান্ড। তবে ঠিক কোন কৌশলে মেসিকে রুখে দিয়েছিল চেলসি, যা দিয়ে এমবাপ্পেকেও রুখে দিতে চান তা খোলাসা করেননি স্টিভ হল্যান্ড। মাঠে এমবাপ্পেকে অকেজো রাখার বিষয়ে তিনি শুধু এটুকু বলেছেন, ‘প্রত্যেকেরই শক্তি এবং দুর্বলতার জায়গা থাকে। ব্যাপারটা অকেনটা ইঁদুর-বিড়াল লড়াইয়ের মতো। হ্যাঁ, তাকে অবশ্যই ভালোভাবে মোকাবিলা করার চেষ্টা করতে হবে আমাদের। প্রথমে আমাদের তার দুর্বলতাটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে হবে।’
এখন দেখার বিষয়, চেলসি যে ছকে মেসিকে রুখতে সক্ষম হয়েছিল সেই ছকে ইংল্যান্ড এমবাপ্পেকে আটকাতে রাখতে সফল হয় কি না।