সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে প্রায় ১ হাজার গাছ লাগানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ (তৃতীয় পর্যায়) প্রকল্পের পরিচালক মো. হাবিবুল ইসলাম।
গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা অর্জনে বিভিন্ন সময়ের আন্দোলন ও ঘটনাসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরার উদ্দেশে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইতোমধ্যে শিখা চিরন্তন, স্বাধীনতা স্তম্ভ ও ভূগর্ভস্থ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রভৃতি নির্মাণ করা হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণ, আধুনিক নগর উপযোগী সবুজের আবহে আন্তর্জাতিক মানে গড়ে তোলা ও দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে ‘ঢাকাস্থ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ’ (৩য় পর্যায়)’ শীর্ষক মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে।
মো. হাবিবুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরার পরিবেশ নেই। উদ্যানের একদিক দিয়ে প্রবেশ করে অন্য দিক দিয়ে নিরাপদে বের হয়ে যাওয়ার পরিবেশও নেই। এখানে ভবঘুরে ও নানা রকমের মতলববাজ লোকের আনাগোনা। আমরা চাচ্ছি একটা মাস্টারপ্ল্যানের মাধ্যমে পুরো উদ্যানকে একটা আন্তর্জাতিক মানের করে গড়ে তুলতে। যেখানে পাকিস্তানি শাসনবিরোধী ২৩ বছরের মুক্তিসংগ্রাম ও ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্বলিত ভাস্কর্য স্থাপন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের স্থানে ভাস্কর্য স্থাপন, ইন্দিরা মঞ্চ নির্মাণ, ওয়াটার বডি ও ফাউন্টেইন নির্মাণ, ভূগর্ভস্থ ৫০০ গাড়ির পার্কিং ও শিশু পার্ক নির্মাণসহ বিভিন্ন নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।
এ মহাকর্মযজ্ঞ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে উদ্যানের কিছু গাছ কাটা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খণ্ডিত তথ্য প্রচারিত হওয়ায় বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে উল্লেখ করে হাবিবুল ইসলাম বলেন, আগামী বর্ষা মৌসুমে প্রায় ১ হাজার গাছ লাগানো হবে। সারা বছর যাতে উদ্যানের কোনো না কোনো গাছে ফুল থাকে, মানুষ এখানে প্রবেশ করে যাতে বেড়ানোর আমেজ পায় সেভাবেই পরিকল্পনা করে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম বিন্যাস করা হয়েছে।
তিনি বলেন, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস সংরক্ষণ এবং ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে আন্তর্জাতিক মানের স্মৃতিকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে যাতে প্রজন্মের পর প্রজন্ম আমাদের গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারে। এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নকে বাধাগ্রস্ত ও প্রশ্নবিদ্ধ করতে একটি মহল নানা ধরনের বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
রেসকোর্স ময়দানে প্রথম গাছ লাগিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এটিকে উদ্যান হিসেবে সৃষ্টি করেছেন দাবি করে তিনি বলেন, ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের স্থান ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সারেন্ডার করার স্মৃতি মুছে ফেলার উদ্দেশে জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে রাষ্ট্রপতি হয়ে এই উদ্যানের ১৫ একর জায়গাজুড়ে ১৯৭৯ সালে শিশু পার্ক নির্মাণ করেন। পরিবেশবাদীরা তখন প্রশ্ন তোলেনি কেন?