করোনাভাইরাস মহামারিতে বিপর্যস্ত সারা বিশ্ব। ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করতে নানাবিধ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মানুষ। এমনকি করোনামুক্ত থাকতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার জারি করা নির্দেশনার বাইরে গিয়েও নানা পন্থা অবলম্বন করছেন অনেকে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত হওয়ার পর মাস তিনেকের মধ্যে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।
করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ার প্রায় দেড় বছর পরে এসেও যেন করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। আর তাই মহামারি শুরুর পর থেকে বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে করোনা থেকে মুক্ত থাকার বিভিন্ন টোটকা বা পন্থা ভাইরাল হয়েছে। এর বেশিরভাগই অবৈজ্ঞানিক ও কুসংস্কার। তবে কয়েকটি টোটকায় করোনা রোগীরা দ্রুত সুস্থও হয়ে উঠছেন বলে দাবি করছেন অনেকে। কিন্তু এসব পন্থা কি সত্যিই করোনাভাইরাসকে প্রতিরোধ করতে পারে?
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর বিভিন্ন প্লাটফর্মে ভাইরাল হয়েছে তেমনই একটি টোটকা। এই টোটকাকে ঘরোয়া পদ্ধতিতে করোনামুক্ত হওয়ার উপায় উল্লেখ করে বলা হচ্ছে, ২ ফোটা পাতি লেবুর রস নাকে দিলেই শরীরে বাড়বে অক্সিজেনের পরিমাণ। পাশাপাশি শরীর থেকে মুক্ত হবে করোনা।
এই ঘরোয়া টোটকার ভিডিও করছেন এক ব্যক্তি। নাম দেওয়া হয়েছে লেবু থেরাপি। তিনি দু’ফোঁটা লেবুর রস নাকের মধ্যে দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন এবং দাবি করেছেন যে, ‘এটি করার মাধ্যমে চোখ, কান, নাক এবং হৃৎপিণ্ডসহ শরীরের সকল গুরুত্বপূর্ণ অংশ মাত্র পাঁচ সেকেন্ডে শুদ্ধ হয়ে যাবে। এমনকি যারা সর্দি-কাশি ও জ্বরে ভুগছেন তারাও নাকি রেহাই পাবেন।’
তবে এই উপায়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। স্বাস্থ্য ও মেডিকেল বিশেষজ্ঞরা এটাতে বিশ্বাস না করার আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ, লেবুর রস এমন উদ্ভটভাবে ব্যবহার করে কোনো উপকারই পাওয়া যায় না।
করোনা মহামারির থাবায় বিশ্বজুড়ে সংক্রমণ ও প্রাণহানি অব্যাহত রয়েছে। ভয়াবহভাবে বেড়েই চলেছে ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা।
শনিবার (৮ মে) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৪ হাজার ৫০ জন। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৩২ লাখ ৮১ হাজার ৮০৭ জনে।
এছাড়া, একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ লাখ ৬১ হাজার ২৪২ জন। এতে মহামারির শুরু থেকে ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ কোটি ৭৪ লাখ ৭৪ হাজার ৮৮৭ জনে।
সূত্র: জি নিউজ