স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন শুরু করেছে বিএনপি। গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানের হোটেল লেকশোরে আয়োজিত জমকালো অনুষ্ঠানে বছরব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। তবে এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের ব্যানারে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছবি না থাকায় আগত বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
বিএনপির যেকোনো ধরনের কর্মসূচিতে সাধারণত তিনজনের ছবির ব্যবহার হয়, যার মধ্যে থাকে দলটির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত জিয়াউর রহমান, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। কিন্তু স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ব্যানারে প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ছবি থাকলেও ছিল না খালেদা জিয়ার ছবি। তবে হোটেলের প্রবেশমুখে খালেদা জিয়ার ছবি সংবলিত ফেস্টুন দেখা গেছে।
বিষয়টি নিয়ে অনুষ্ঠানে আগত নেতাদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। তবে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে অভিযুক্ত হতে পারেন— এমন আশঙ্কা থেকে এ বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি হননি অনেকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক এক নারী সংসদ সদস্য জাগো নিউজকে বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন হচ্ছে, সেখানে গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছবি নেই কেন, এটা আসলে আমার বোধগম্য নয়। জানি না কী কারণে আয়োজকরা ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) ছবি ব্যানারে রাখেননি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বলেন, ‘খালেদা জিয়ার ছবি ব্যানারে যদি পরিকল্পিতভাবে বাদ দেয়া হয়, সেটা এক জিনিস, আর যদি অপরিকল্পিতভাবে হয়ে থাকে তাহলে তা অমার্জনীয় অপরাধ।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা নাজিম উদ্দিন আলম বলেন, আমানুল্লাহ আমানের নেতৃত্বে নয়াপল্টনে সাজসজ্জা যেটা হয়েছে সেখানে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের ছবি রয়েছে। এখানে কেন ম্যাডামের ছবি রাখা হয়নি তা আমি জানি না। আমার মনে হয়, ম্যাডামের ছবি রাখা উচিত ছিল।
যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা গিয়াস উদ্দিন আল মামুন বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের যে উদ্বোধন অনুষ্ঠান, সেখানে ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) ছবি দেখতে না পেয়ে আমি খুব অবাক হয়েছি। জানি না কী কারণে ম্যাডামের ছবি দেয়া হয়নি। বিষয়টির জন্য আমাদের অনেকেই কষ্ট পেয়েছে। তৃণমূল নেতাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে।’
ব্যানারে খালেদা জিয়ার ছবি না থাকা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান।
সোমবার এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘বদলে যাওয়া এ এক অন্য রকম বিএনপি। সব আছে, সবাই আছে, শুধু নেই বেগম খালেদা জিয়ার ছবি ও নামটি। এই ঘোর দুষ্কালেও অনেকেই ছিলেন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানমালার শুভ উদ্বোধন উপলক্ষে লেকশোর হোটেলে আয়োজিত এই জাঁকালো অনুষ্ঠানে। তবে বিএনপির আমন্ত্রণ পেয়েও সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতারা এবং দাওয়াত না পাওয়ায় জামায়াত নেতারা ছিলেন অনুপস্থিত।’