প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে কোভ্যাক্স থেকে দেশে পৌঁছেছে ফাইজারের এক লাখ ৬২০ ডোজ টিকা। সোমবার রাত ১১টা ১৫ মিনিটের দিকে অ্যামিরেটস এয়ারলাইন্সের ইকে-৫৮২ ফ্লাইটে এ টিকা দেশে পৌঁছে।
সোমবার (৩১ মে) রাতে ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র ও লাইন ডিরেক্টর ডা. শামসুল হক।
তিনি বলেন, ফাইজারের ১ লাখ ৬২০ ডোজ টিকা রাত ১১টা ১৫ মিনিটের দিকে দেশে এসে পৌঁছেছে। বিমানবন্দর থেকে এই টিকা বিশেষ ফ্রিজারভ্যানে করে তেজগাঁওয়ে ইপিআই স্টোরেজে রাখা হবে।
এ সময় ইউপিআইয়ের প্রোগ্রাম ম্যানেজার গোলাম মাওলা, স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ এস এম আলমগীর, অধিদফতরের ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্যসচিব ডা. শামসুল হক উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, রোববার (৩০ মে) ফাইজারের টিকার চালান নিয়ে দিনভর নাটকীয়তা চলে। দফায় দফায় বদলায় ফাইজারের টিকা আসার দিনক্ষণ। সবশেষ রোববার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, সোমবার (৩১ মে) রাতে ঢাকায় আসবে কোভ্যাক্স থেকে পাওয়া ফাইজারের টিকা।
স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, ফাইজার সংরক্ষণ করতে মাইনাস ৬০ ডিগ্রি থেকে মাইনাস ৯০ ডিগ্রি তাপমাত্রার রেফ্রিজারেটর দরকার। ২ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখা যাবে পাঁচ দিন। আর রেফ্রিজারেটরের বাইরে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখা যাবে দুই ঘণ্টা।
টিকার প্রয়োগ প্রসঙ্গে এর আগে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলম বলেছিলেন, আপাতত এই টিকা রাজধানীতে প্রয়োগ করা হবে। তাপমাত্রা জটিলতায় রাজধানীর সব কেন্দ্রে এই টিকা দেওয়া যাবে না। তবে কোন কোন সেন্টারে এই টিকা দেওয়া হবে এবং কারা ফাইজারের টিকা পাবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। ঢাকার মধ্যে এই টিকা প্রয়োগ এখনও প্ল্যানিং পর্যায়ে আছে।
কোভ্যাক্স প্ল্যাটফর্মটি গড়ে তোলা হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনস (গ্যাভি) এবং কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনসের (সিইপিআই) উদ্যোগে। এ জোটের মাধ্যমে প্রতিটি দেশের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশের জন্য বিনামূল্যে টিকার ব্যবস্থার কথা।
কোভ্যাক্স থেকে প্রথম পর্যায়ে এক কোটি ২৭ লাখ ডোজ টিকা পাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু বিশ্বজুড়ে টিকার সংকট দেখা দেওয়ায় তা সম্ভব হচ্ছে না। চলতি বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মধ্যে কোভ্যাক্স থেকে টিকা পাওয়া শুরু হওয়ার কথা থাকলেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিশ্বজুড়ে টিকার সংকট তৈরি হওয়ায় তা পিছিয়ে যায়। এ পর্যন্ত তিন দেশের উৎপাদিত টিকা দেশে আসল। এর আগে সেরামের ও চীনের টিকা দেশে আসে।