আজ (সোমবার) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি করেন সাদপন্থি পক্ষের মাওলানা শফিক বিন নাঈম। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ১৮ ডিসেম্বর টঙ্গীর ময়দানে দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে, সেজন্য আমরা মর্মাহত। আমরা লক্ষ্য করেছি, এই ঘটনাকে রাজনৈতিক আলেমরা তাদের স্বার্থসিদ্ধির প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করছেন। সারা দেশে অহিংস ও শান্তিপ্রিয় তাবলীগ জামাতের মাওলানা সাদের অনুসারীদের ঘরবাড়ি ও দোকানপাট ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় আমাদের সাথীদের ওপর বর্বরোচিত আক্রমণ হচ্ছে।
মাওলানা শফিক বিন নাঈম বলেন, মামলা ছাড়াই সাথীদের গ্রেপ্তার, বিভিন্ন মসজিদে সাথীদের নামাজ ও ইবাদত করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশের সহযোগিতায় একদল উগ্রপন্থীরা বাসাবাড়িতে গিয়েও তাবলিগের সাথীদের মারধর করছেন। অন্যায়ভাবে এক পক্ষের মুখপাত্রকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে বিদেশি মেহমানমানদের ওপরও তারা হামলা করছেন।
তিনি আরও বলেন, গত ২০ ডিসেম্বর টঙ্গীর তুরাগ তীরে আমাদের পূর্ব নির্ধারিত জোড় (পুরানা তাবলীগের সাথীদের বাৎসরিক সম্মেলন) করার লক্ষ্যে ইজতেমা মাঠের পশ্চিম পাশে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিয়েছিলেন। যেকোনো সংঘাত এড়াতে আমরা ইতোপূর্বে প্রশাসনকে বারবার অবহিত করে ৩৬টি চিঠি দিয়েছি। তাছাড়া যোবায়েরপন্থি ও হেফাজতের নেতাদের কাছে আমরা শান্তি ও সমঝোতার প্রস্তাব জানিয়েছি। কিন্তু তারা সমঝোতা করেননি। এমনকি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকেও আমাদের তাবলিগের সাথীদের পুলিশ ও সাংবাদিকদের সামনে তারা প্রকাশ্যে অপহরণ করে কাকরাইল মসজিদে নিয়ে নির্যাতন করেছেন।
এই সংবাদ সম্মেলন থেকে ১০ দফা দাবিও তুলে ধরেন তিনি। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে —
সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের নামে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে, মুফতি মুয়াজ বিন নূরকে দ্রুত নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে, সারা দেশে মসজিদভিত্তিক তাবলিগের কাজকে সমান অধিকারের ভিত্তিতে পরিচালনার পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে, তাবলিগের যেকোনো বিষয়ে হেফাজত বা যোবায়েরপন্থি— এমন এক পক্ষের ব্যক্তিদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত গ্রহণ পরিহার করতে হবে, সঠিক সময়ে কাকরাইল মসজিদ এবং টঙ্গী ইজতেমা ময়দান বুঝিয়ে দিয়ে নির্দিষ্ট তারিখে বিশ্ব ইজতিমা অনুষ্ঠান করার সব কার্যক্রম নিশ্চিত করতে হবে, নিজামুদ্দীনের অনুসারীদের ওপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে, তাবলিগের উভয়পক্ষকে নিয়ে সমঝোতার পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মঞ্জরুল হক, মাওলানা মাসুদুল হকসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।