আজ সোমবার সকাল সোয়া ১০টায় শুরু হয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার স্বাক্ষ্যগ্রহণ। উক্ত মামলার বাদী ও সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌসের স্বাক্ষ্যদানের মধ্য দিয়ে বিচারকাজ শুরু হয়।
শারমিন শাহরিয়ারের সাক্ষ্য দেয়ার পর আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তাকে এক এক করে জেরা করেন। আদালতে উপস্থিত ছিলেন সিনহার সাবেক সহকর্মী সাহেদুল ইসলাম সিফাত।মামলায় স্বাক্ষ্যদানের জন্য ৮৩ জন স্বাক্ষীর মধ্যে প্রথম দফায় তিনদিনে স্বাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আদালতে উপস্থিত থাকতে ১৫ জন স্বাক্ষীকে সমন জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলী ফরিদুল আলম।সাক্ষ্য ও জেরা শেষে আদালত প্রাঙ্গনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মেজর সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস।
তিনি বলেন, আমি আদালতে স্বাক্ষী দিয়েছি। বিভিন্ন আসামির আইনজীবীরা আমাকে জেরা করেছেন এবং এটি চলমান রয়েছে। আগামীকালও এটি চলবে। আমি বিজ্ঞ আদালতের কাছে প্রার্থনা করেছি, আমাদের চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত যে ১৫ আসামি রয়েছে, তারা যেন সর্বোচ্চ শাস্তি পায়।
গত ২৬, ২৭ ও ২৮ জুলাই স্বাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য থাকলেও মহামারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে তা পিছিয়ে যায়। পরে গত ১৬ আগস্ট স্বপ্রণোদিত হয়ে ২৩, ২৪ ও ২৫ আগস্ট স্বাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করে আদেশ দেন আদালত।এদিকে বাদী পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর দাবি করেছেন, মামলার স্বাভাবিক বিচারিক কার্যক্রমে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে আসামি পক্ষ।
তিনি বলেন, আজও আসামি পক্ষ ১১টি দরখাস্ত দিয়েছে। সবগুলোর সাবস্টেন্স হলো, মূল আসামির মামলা স্থগিত করা। বিচারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা। কিন্তু এটা হয়নি।
আজ মামলার এক নম্বর স্বাক্ষী বাদীর সাক্ষ্য শেষ হয়ে গেছে। জেরা চলছে। এরা একটা মিথ্যা প্লি নিয়েছে, ‘আমরা কাগজপত্র পাইনি, সময় দেয়া হোক’। মানে হলো, হাইকোর্টে গিয়ে প্যাঁচ লাগিয়ে বিচারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই টেকনাফের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর সিনহা। এরপর জল ঘোলা হয় অনেক।
তৎকালীন টেকনাফের ওসি প্রদীপ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ লিয়াকতসহ ৯ জনকে আসামি করে মামলা করেন সিনহার বোন। পরে গ্রেপ্তার করা হয় ঘটনার সময় এপিবিএন এর তিন সদস্য ও পুলিশের তিন সোর্সকেও।
কয়েকমাস তদন্ত শেষে ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দেয় তদন্তকারী সংস্থা র্যাব। যার মধ্যে ১২ জনই ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।গত ২৭ জুন মামলার ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত।