ভোটার হওয়ার নতুন নিয়ম সম্পর্কে অনেকই জানেন না। যাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো কিভাবে নতুন ভোটার হতে হয় সেই ধাপগুলো সম্পর্কে জানা। বিডিনিউজ ট্র্যাকারের পাঠকদের জন্য আজকের আয়োজন কিভাবে নতুন ভোটার হতে হয় এবং কিভাবে এনআইডি বা জাতীয় পরিচয়পত্র করতে হয় তার বিস্তারিত।
বাংলাদেশের সকল নাগরিকদের জন্য পরিচয় সনদ হচ্ছে ভোটার কার্ড যাকে জাতীয় পরিচয় পত্র বা সংক্ষেপে এনআইডি বলা হয়। দেশের ভিতর এটি পরিচয় প্রমাণের প্রধান মাধ্যম। আঠার বছর পূর্ণ হলে ভোটার আইডি করা সবার জন্য বাধ্যতা মূলক করা হয়েছে আইনে। তাই আজকে আলোচনা করা হলো “ভোটার হওয়ার নতুন নিয়ম ২০২২: এনআইডি (NID) করতে কি কি লাগে?”
ভোটার হওয়ার নতুন নিয়ম ২০২২: এনআইডি (NID) করতে যা যা লাগবে
তাই নিজেকে ভোটারে অন্তর্ভুক্ত করা আবশ্যক কর্তব্য। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এ কার্ড প্রদানসহ যাবতীয় কাজ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। নতুন ভোটার কিভাবে হবেন কিংবা ভোটার হতে কি কি লাগে বা NID পেতে প্রক্রিয়া কি তা নিয়ে আজকের পোস্টটি সাজানো হয়েছে।
জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড (NID)
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নাগরিকদের যে পরিচয় সনদ প্রদান করা হয় তাকে জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড কিংবা সংক্ষেপে এনআইডি (NID) বলা হয়।
বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকদের জন্য এটি অত্যান্ত গরুত্বপূর্ণ একটি সনদ। সরকারী বেসরকারী যে কোন দাপ্তরিক কাজে এটি প্রয়োজন হয়। বর্তমানে জতীয় পরিচয়পত্রের স্মার্ট কার্ড প্রদান করা হয়।
ভোটার হওয়া প্রক্রিয়া
সাধারণত প্রতি তিন বছর পর পর আদম শুমারীর মাধ্যমে নতুন ভোটার নিবন্ধন করা হয়। সেই সময় নির্বাচন কমিশনের লোকজন বাড়ী বাড়ী গিয়ে নতুন ভোটারের তালিকা করে থাকেন।
যারা বাদ পড়েন তারা অনলাইনে আবেদন করে নতুন ভোটার হতে পারে। নির্বাচন কমিশন প্রতি বছর জানুয়ারী মাসের শেষে নতুন ভোটারের তালিকা প্রকাশ করে থাকে।
ভোটার নিবন্ধন একটি চলমান প্রক্রিয়া। আঠার বছর পূর্ণ হওয়ার সাথে সাথে ভোটার নিবন্ধন করে ফেলা জরুরী। কেননা সময়মত ভোটার হতে না পারলে পরবর্তীতে অনেক হয়রানির স্বীকার হতে হয়।এছাড়ও অফিসিয়াল অনেক কাজ করতে ঝামেলা পোহাতে হয়।
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য কি কি কাগজপত্র লাগে?
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য নির্বাচন অফিসে যে সকল কাগজপত্র জমা দিতে হয় তা নিচে দেওয়া হলো-
- জন্ম সনদের ফটোকপি
- পিতা মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রত্যায়ন পত্র
- শিক্ষিত হলে এসএসসি সনদসহ শিক্ষাগত সনদের সত্যায়িত ফটোকপি
- রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করা হলে তার ফটোকপি
- বিদ্যুৎ বিল (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
- জমির কাগজ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
ভোট নিবন্ধন করার জন্য কোথায় যেতে হবে?
ভোট নিবন্ধন চলাকালে আপনার এলাকায় নিবন্ধন করতে পারবেন। যদি বাদ পড়ে থাকেন তাহলে উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে ভোটার নিবন্ধন করে নিতে পারবেন।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য যোগাযোগ করুন। তার আগে আপনাকে ভোটার হওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হবে।
নতুন ভোটার হওয়ার নিয়ম
আপনার বয়স যদি আঠার পূর্ণ হয় এবং ভোটার না হয়ে থাকেন তাহলে নিচের নিয়ম অনুসরণ করে খুব সহজেই ভোটার হতে পারেন। ভোটার নিবন্ধন সাধারণত নভেম্বর থেকে জানুয়ারী মাসের মধ্যে হয়ে থাকে। এলাকা অনুযায়ী সময়টা ভিন্নতা হয়।
তবে যে কোন সময় অনলাইনে ভোটার নিবন্ধনের আবেদন করতে পারবেন।নিজেকে ভোটার নিবন্ধন করার জন্য অনলাইনে আবেদন করার পর আবেদন কপি প্রিন্ট করে নিন।
উপজেলা নির্বাচন অফিসে খোজ নিয়ে জানুন আপনার এলাকার ছবি, ফিংগার প্রিন্ট কখন শুরু হবে। আপনার এলাকার ছবি তোলা শুরু হলে আবেদন ফরম ও প্রয়োজনী কাগজপত্রসহ ছবি উঠে আসুন।
ছবি, ফিংগার নেওয়ার পর আপনাকে একটি স্লিপ দেওয়া হবে। স্লিপটি যত্ন করে রেখে দিন। স্মার্ট কার্ড নেওয়ার সময় স্লিপটি সাথে নিয়ে যাবেন।
ভোটার নিবন্ধন করার জন্য অনলাইনে আবেদন
ভোটার হওয়ার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। মোবাইলেও আপনি আবেদন করতে পারবেন। এজন্য ইন্টারনেটে https://services.nidw.gov.bd/ ঠিকানায়া গিয়ে নতুন ভোটার নেভিগেশন বাটন ক্লিক করে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে আবেদন ফরম পূরণ করে ফেলুন।
এরপর ফরমটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিন। আপনার এলাকার নতুন ভোটারদের ছবি তোলা শুরু হলে ফরমটি সাথে নিয়ে ছবি উঠিয়ে নিন।
আপনার ল্যাপটপ/কম্পিউটার কিংবা স্মার্টফোন যদি না থাকে তাহলে কোন কম্পিউটারের দুকানে গিয়ে অনলাইনে আবেদন ফরমটি পূরণ করে নিন। নিজে নিজে কিভাবে অনলাইনে ভোটার হবেন তার বিস্তারিত জানতে “অনলাইনে ভোটারহবেন কিভাবে” ইনফোটি দেখুন।
NID এর স্মার্ট কার্ড প্রাপ্তি
নতুন ভোটারের জন্য আপনার ছবি উঠা হয়ে গেলে জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য স্মার্ট কার্ড তৈরীর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। কয়েক মাসের মধ্যেই আপনার জন্য ভোটার আইডি কার্ডের একটি স্মার্ট কার্ড তৈরী হবে। কার্ড বিতরণের তারিখ আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হবে। নির্ধারিত তারিখে উপস্থিত হয়ে কার্ড সংগ্রহ করুন।
আপনার স্মার্টকার্ড তৈরী হয়েছে কিনা অনলাইনে ট্রাক করে জেনে নিতে পারবেন। নির্বাচন কমিশনের সার্ভিস ওয়েবসাইটে গিয়ে কার্ড ট্রাকিং অপশন ক্লিক করে আপনার স্লিপ নাম্বার দিয়ে সার্চ করুন। আপনার কার্ড তৈরী হয়ে গেলে বিতরণের তারিখ দেখতে পারবেন।
অনলাইন থেকে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করবেন কিভাবে?
আগে খুব সহজেই অনলাইন থেকে ভোটার আইডি ডাউনলোড করা গেলেও এখন একটু কঠিন করা হয়েছে। আগে সবাই পরিচয পত্রে একটি অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে পেরেছে কিন্তু বর্তমানে তা বাতিল করা হয়েছে। যারা নতুন ভোটার হয়েছে কিন্তু এখনো স্মার্ট কার্ড পায় নাই, তারাই শুধু অনলাইন এনআইডি বিনামূল্যে ডাউনলোড করতে পারবে। আর যারা ইতিমধ্যেই আইডি কার্ড পেয়েছেন তারা অনলাইন এনআইডি কপি নেওয়ার জন্য রিইস্যু করতে হবে। এক্ষেত্রে রিইস্যু ফি পরিশোধ করতে হবে।
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করবেন কিভাবে বিস্তারিত জানার জন্য “অনলাইনে ভোটার হবেন কিভাবে? ইন্টারনেট থেকে NID ডাউনলোড করার নিয়ম জেনে নিন” এবং “NID Wallet ব্যবহার জনুন” ইনফো দুটি ভাল করে পড়ুন।