ভারতের রাজধানী দিল্লিতে শুক্রবার রাতে একটি বাণিজ্যিক ভবনে আগুন লেগে ২৭ জন দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। মৃত্যু সংখ্যা আরও ভারতে বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন উদ্ধারকর্মীরা। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। খবর এনডিটিভির।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, বাণিজ্যিক ভবনটির দুই মালিক হরিশ গোয়েল ও বরুণ গোয়েল। ভবনটিতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না রাখায় এবং বিশাল এ বাণিজ্যিক ভবনটিতে একটি মাত্র সিঁড়ি রাখায় এ প্রাণহানির জন্য তাদের দায়ী করা হয়। এছাড়া ভবনটি নির্মাণে দমকল বাহিনীর সার্টিফিকেটও নেওয়া হয়নি। শুক্রবার বিকালে ভবনটির দ্বিতীয় তলায় একটি মটিভেশনাল স্পিচের অনুষ্ঠান চলছিল। সেখান থেকেই মূলত আগুনের সূত্রপাত হয় বলে জানায় পুলিশ।
এ সময় দ্রুত গোটা ভবনটিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। একটি মাত্র সিঁড়ি থাকায় হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে অনেকে পড়ে যায়। এ অবস্থায় দগ্ধ হয়ে মারা যান। দমকল বাহিনীর ২৪টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়। শুক্রবার গভীররাত পর্যন্ত উদ্ধার ৫০ জন উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১২ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দিল্লির সঞ্জয় গান্ধী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পোড়া ভবন থেকে শুক্রবার গভীররাত থেকে একে একে বের করে আনা হচ্ছে মৃতদেহ। পোড়ার ক্ষত নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে মৃতদের পরিবার পিছু ২ লাখ ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।
মুন্ডকা মেট্রো স্টেশনের কাছে ওই তিনতলা বাড়িটিতে মূলত বিভিন্ন সংস্থার অফিস রয়েছে। দোতলায় রয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা ও রাউটার নির্মাতা একটি সংস্থার অফিস।
শুক্রবার বিকাল পৌনে পাঁচটা নাগাদ সেই অফিসেই প্রথম আগুন লাগে। দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে ভবনটিতে। ভিতরে যারা ছিলেন, কিছু লোক বেরিয়ে আসেন। শনিবার সকালেও উদ্ধার কাজ চলছিল।
সমাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, কেউ দড়ি ধরে দেওয়াল বেয়ে নামছেন। কেউ আগুন থেকে বাঁচতে লাফ দিচ্ছেন। ওই দৃশ্য মনে করিয়ে দিয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে কলকাতার পার্ক স্ট্রিটে স্টিফেন কোর্টের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে। নরেন্দ্র মোদি এক টুইটবার্তায় বলেছেন, ‘দিল্লির অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানির ঘটনায় আমি অত্যন্ত দুঃখিত। শোকাহত পরিবারগুলিকে সমবেদনা জানাই। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।’