ইতিহাস ঘেটে দেখলাম পৃথিবীতে যতবার অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে ততবারেই কারণ হিসেবে ছিলো বড় কোন যুদ্ধ। আমরা সবাই দি গ্রেট ডিপ্রেশনের কথা শুনেছি। পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক মন্দার পেছনে ছিলো দুটি বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব। সদ্য শেষ হওয়া ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক সভায় বিশ্বকে আসন্ন অর্থনৈতিক মন্দার একটা পূর্বভাস দেয়া হয়েছে। যদিও সেটি ২০২২ এর শেষ ভাগে শুরু হয়ে ২০২৩ এর শেষভাগে শেষ হওয়ার কথা বলা হয়েছে।
২০২২ সালে এসে পৃথিবী ফের অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়তে যাচ্ছে। এর পেছনে যে কেবল রাশিয়া -ইউক্রেন যুদ্ধই দায়ী তা কিন্তু নয়। তার আগের ২ বছর কোভিডের কারণে পুরো পৃথিবী স্তব্ধ হয়েছিলো। সে কারণে একটা ছোটখাটো অর্থনৈতিক মন্দা অনীবার্য ছিলো কিন্তু সে ছোটখাটো অর্থনৈতিক মন্দাই বড় আকার ধারণ করতে যাচ্ছে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে। অনেকেই বাংলাদেশ সরকারকে দোষারোপ করতে চাচ্ছেন, ব্যর্থতার দায়ভার নিতে বলছেন। দেখুন বাংলাদেশ পৃথিবীর ফাস্টেস্ট গ্রোয়িং জিডিপির দেশ। গত ১২ বছর বাংলাদেশে যতগুলো উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ হয়েছে পৃথিবীর আর কোন দেশে এত বেশি অবকাঠামোগত উন্নয়নমূলক কাজ হয়নি। স্বাভাবিক কারণেই পরিস্থিতি যদি স্বাভাবিক থাকতো তাহলে বাংলাদেশকে মোটেও সাফার করতে হতো না। বিশ্বজুড়েই যেহেতু স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে না তার প্রভাব তো বাংলাদেশে পড়বেই। আমাদের অনেক বেশি উন্নয়ন প্রকল্প চলামন । সেগুলো স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে মোকাবেলার লক্ষ্যেই হাতে নেয়া হয়েছিলো। বেশিরভাগ প্রকল্পই কিন্তু ৮/১০ বছর আগের। হুট করে কোভিড-১৯ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ না আসলে কিন্তু এরকম পরিস্থিতির তৈরি হতো না।
সবচেয়ে দুঃখের বিষয় দেশের এই কঠিন পরিস্থিতিতে বিরোধীদলগুলো প্রবাসীদের বৈধ উপায়ে রেমিট্যান্স পাঠাতে নিরুৎসাহীত করছেন। বাংলাদেশের মত দেশ তো টিকে আছে আরএমজি আর রেমিট্যান্সের উপর। সেখানেও যদি অপরাজনীতি করা হয়- দেশকে তো সাফার করতেই হবে। দেশের যে পরিস্থিতি তাতে আগামী ১ বছর কঠিন সময় পার করতে হতে পারে। তাই বলে এটা ভাববেন না যে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে যাবে। লিখে রাখতে পারেন বাংলাদেশ শ্রলীঙ্কা হবার ১ বছর আগেই পাকিস্তানসহ বিশ্বের বেশ কিছু দেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে যাবে। আসুন বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার সময় অপরাজনীতি না করে সবাই মিলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাই।