ফেব্রুয়ারির মধ্যে ৭-৮ কোটি মানুষ টিকা পাবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

0
21

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে দেশের আরও ৭-৮ কোটি লোককে সরকার করোনার টিকা দেবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সোমবার (২৩ আগস্ট) সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সংক্রমণ কমে আসছে। গতকালও ১৫ শতাংশে নেমেছে। যেটা ৩২-এ উঠেছিল। মৃত্যুর গড় হারও কমেছে। পৌনে তিনশ’ থেকে ১২০-এ নেমেছিল। ওঠানামা করছে। টিকার প্রোগ্রাম বজায় আছে। শহরে বেশি টিকা দেওয়া হচ্ছে। মডার্নার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হচ্ছে, ওটা আমাদের হাতে আছে। হাতে আরও আছে সিনোভ্যাকের দ্বিতীয় ডোজ। অ্যাস্ট্রাজেনেকা আমরা পেয়েছি। আশা করি এ মাসের শেষে ফাইজার আরও পাব। আমাদের ৬০ লাখ দেওয়ার কথা, এ মাসের শেষে কিছু পাব। সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাকিগুলো পেয়ে যাব।’

চীনের সিনোফার্মের ১০ লাখ টিকা আসবে বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত গত ১০ থেকে ১৫ দিনে টিকার বিষয়ে অনেক কাজ করা হয়েছে। অর্ডার দেয়া হয়েছে অনেক। চীনে প্রায় নতুন ৬ কোটি ডোজের জন্য অর্ডার দেয়া হয়েছে। তার আগে দেড় কোটি ডোজের অর্ডার ছিল। মোট সাড়ে ৭ কোটি। আমাদের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে অফার দেওয়া হয়েছে। আমরা টিকা নেব কি-না, সেগুলো কিনে নিতে হবে।’

বাংলাদেশে আগামীতে টিকার খুব একটা অভাব থাকবে না উল্লেখ করে জাহিদ মালেক বলেন, ‘একটা ভর্তুকি রেটে। সেটা পুরোটাই আমরা গ্রহণ করেছি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে পুরোটাই আমরা গ্রহণ করেছি। সেখানে আছে সিনোফার্মের তিন কোটি এবং সাড়ে সাত কোটি সিনোভ্যাক। মোট সাড়ে ১০ কোটি আমরা কিনছি। সেটা অর্ডার দেয়া হয়ে গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আমাদের ৬ কোটি ৮০ লাখ বিনামূল্যে টিকা দেবে, সেটা চলমান আছে। এরমধ্যে ফাইজার আসবে বিনামূল্যে। যেভাবে আমরা ভ্যাকসিনের অর্ডার দিয়েছি আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যেভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তাহলে বাংলাদেশে ভ্যাকসিনের খুব একটা অভাব থাকবে না। যদি সবাই কমিটমেন্ট রক্ষা করে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা যদি ১৬ কোটি টিকা পেয়ে যাই, তাহলে ৮ কোটি লোককে দিতে পারব। এই টিকাগুলো ডিসেম্বরের মধ্যেই আসার কথা। বিনামূল্যে কোভ্যাক্সের কিছু টিকাও আসবে। ১৬ কোটির থেকেও বেশি হবে টিকা। আমরা মনে করি, আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মধ্যে দেশের ৭-৮ কোটি লোককে টিকা দিতে পারব।’

তিনি আরও বলেন, ‘শ্রমিকদের টিকা দেয়ার দাবি ছিল। আমরা ফ্রন্টলাইনারদের দিচ্ছি, তাদের পরিবারের সদস্যদের দিচ্ছি। শিক্ষার্থীদের, বিদেশে চাকরি নিয়ে যারা যাচ্ছেন তাদের দেয়া হচ্ছে। সব কারখানার শ্রমিকদের টিকা দেওয়ার দাবি উঠেছে। টিকা পেলে আমরা সব শ্রমিকদের দিয়ে দেব। আমরা চাই সব মানুষ টিকা পাক, সুরক্ষিত থাকুক।’

গণটিকা কবে শুরু হবে- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এ মুহূর্তে গণটিকার কার্যক্রম আমরা করছি না। কারণ সেই পরিমাণ টিকা আমাদের হাতে নেই। আর আমরা গণ কথাটা হয়ত আগামীতে আর ব্যবহার করব না। অধিদপ্তর থেকে করেছে। আমরা সেই নামটি আর ব্যবহার করব না। আমাদের হাতে যখন যতটুকু টিকা আসবে, সেই টিকা যত মানুষকে দিতে পারব, তত মানুষের কাছে বার্তা যাবে, তারাই আসবে। লম্বা লাইন আর করতে দেব না।’

জাহিদ মালেক আরও বলেন, ‘আগে নিবন্ধন করেও অনেকে এখনও এসএমএস পায়নি, নিবন্ধিত সাড়ে ৩ কোটির মধ্যে ২ কোটির বেশি টিকা পেয়েছে। আমাদের কাছে যতটুকু টিকা আছে সেই টিকা দিতে পারব। টিকা কতটুকু হাতে আছে সেই অনুযায়ী নিবন্ধন দেব। সব কাজই সিস্টেমে আসতে একটু সময় লাগে। গ্রামে বেশি আক্রান্ত হচ্ছিল বলে টিকা গ্রামে নিয়ে যাই। ব্যাপক সাড়াও পেয়েছি। হাতে টিকা বেশি পরিমাণে এলে আমরা গ্রামে দেব। বেভিরভাগ মানুষ গ্রামে থাকেন। বয়স্করা বেশি গ্রামে থাকেন। তাদের সুরক্ষিত করতে হবে।’

১৮ বছরের বেশি বয়সের অনেকে এনআইডি কার্ড না থাকায় নিবন্ধন করতে পারছেন না- এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘টিকা প্রাপ্তি সাপেক্ষে নিবন্ধন করতে দেব এবং কর্মসূচি দেব।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here