কুড়িগ্রামে হাঁস-মুরগি পালনে ঝুঁকছেন গ্রামের নারীরা

  • প্রকাশিতঃ
  • ২৯ জুলাই, ২০২২ ৯:৪৫ অপরাহ্ণ

কুড়িগ্রামে হাঁস তার পাশে মুরগি পালনে ঝুঁকছেন গ্রামের নারীরা। আত্মকর্মসংস্থান গড়ে তুলতে পিছিয়ে নেই গ্রামের নারীরাও। সংসারে অর্থ সচ্ছলতা ফেরাতে তারা বাড়ির কাজের পাশাপাশি হাঁস-মুরগি পালন করে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। বিশেষ করে নদ-নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলে নারীরা হাঁস পালন করে পরিবারে আনছেন অর্থ সচ্ছলতা ।

সরেজমিনে দেখা যায়, বাড়িতে হাঁস পালন করছেন সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর যাত্রাপুর গ্রামের রেহেনা। তার স্বামী সাইদুর মিয়া মাছ কেনাবেচা করেন। পরিবারে স্বামীর একমাত্র উপার্জনে কোনো রকমে সংসার চলে। বৃদ্ধ শ্বশুর ও এক মেয়ের খরচ মেটাতে ৫০টি হাঁসের বাচ্চা ঘরে তোলেন রেহেনা। সেই বাচ্চাগুলোকে বড় করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি।

কুড়িগ্রাম প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ডিম দেওয়া হাঁসের খামারের সংখ্যা প্রায় ৫৩৮টি। আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামারে প্রতিটি হাঁসের বাচ্চা ২০ টাকা ও প্রতিটি ডিম সাড়ে ৭ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। বাড়িতে হাঁস পালন করেন এমন নারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিটি হাঁসের বাচ্চা জেলা শহর থেকে ৩০ টাকা দরে কিনে নিয়ে আসেন। বাচ্চাগুলোর বাসস্থানের জন্য বাঁশের ঘর কিংবা ঘরের কোণে কুটির তৈরি করেন। বাচ্চাগুলো দ্রুত বেড়ে উঠতে বাড়ির চারদিকে খোলা মাঠ ও পুকুরে ছেড়ে দেন। এভাবেই অল্প ব্যয়ে হাঁসগুলো পরিপক্ব করেন তারা। তাদের এসব হাঁস পরিপক্ব করতে বাড়তি খরচ করতে হয় না।  তিন থেকে সাড়ে তিন মাস পালন করে প্রতিটি হাঁস ৪৫০-৫০০ টাকা বিক্রি করেন তারা।

পাশের গ্রামের মর্জিনা বেগম নামে এক নারী বলেন, আমার স্বামী ব্যবসা করেন, পাশাপাশি আমাকে ৪৫ টি হাঁসের বাচ্চা এনে দিয়েছেন। এই হাঁসগুলো বড় করতে তিন মাসের মতো সময় লাগে। আমার ৪৫ টি হাঁস পালনে সব মিলিয়ে ৬-৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল। এখন পর্যন্ত ১৪ হাজার টাকার হাঁস বিক্রি করেছি। আরও ১০টি হাঁস বাড়িতে আছে। হাঁস পালনে তুলনামূলকভাবে খরচ কম, লাভ ভালো। হাঁস পালন করলে কোনো পরিবারে অভাব থাকার কথা নয়।

কুড়িগ্রামের হাঁস-মুরগি উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এখান থেকে যেসব খামারি হাঁসের বাচ্চা নেন, তারা সিডিউল দিয়ে নেন। যে সময়টা চাহিদা বেশি, ঠিক সেই সময়ে মাসে ৭-৮ হাজার বাচ্চা উৎপাদন হয় এখানে। এখানকার চাহিদা মিটিয়ে জেলার বাহিরেও পাঠানো হয়।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. মো. আব্দুল হাই সরকার জানান, উন্মুক্ত নিচু জমি ও জলাশয়ে হাঁস পালন করলে বাড়তি খাবার লাগে না। এ কারণেই  সহজেই হাঁস পালন করা যায়। হাঁসের বাচ্চা অল্প কিছু দিনের মধ্যে বড় হাঁসে পরিণত হয়। ফলে দামও ভালো পাওয়া যায়। আমরা খামারিদের সরকারিভাবে ভ্যাক্সিন প্রদান করি ও বিভিন্ন রোগের বিষয়ে পরামর্শ দেই। জেলায় ডিম দেওয়া হাঁসের খামারের সংখ্যা প্রায় ৫৩৮টি। এই খামার ছাড়াও অনেকে বছরে ২-৩ বার হাঁস পালন করেন এবং বিক্রিও করেন। সরকার যদি এদের সহযোগিতা করেন তাহলে তারা আরও বেশি আয় করতে পারবেন।

Related Posts

  • ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪
  • 38 views
এক্সপ্রেসওয়েতে দুই গাড়ির সংঘর্ষ, নিহত ১

ঘন কুয়াশায় ফের ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে দুই গাড়ির সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও ৩ জন। সোমবার ভোরে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে পিকআপ-প্রাইভেটকার…

Read more

  • ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৪
  • 924 views
সিরাজগঞ্জে বিআইএমটি অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি অভিযোগে বয়কট করলেন শিক্ষার্থীরা

বার বার দুর্নীতি ও অনিয়ম বাগেরহাট ও ফরিদপুর থেকে বিতাড়িত অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম কে ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি (আইএমটি) সিরাজগঞ্জে পদায়ন করায় বাংলাদেশ…

Read more

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You Missed

দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে কাজ করছে ড. ইউনূস সরকার

দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে কাজ করছে ড. ইউনূস সরকার

সংবাদ সম্মেলন করে ১০ দফা দাবি সাদপন্থিদের

সংবাদ সম্মেলন করে ১০ দফা দাবি সাদপন্থিদের

এক্সপ্রেসওয়েতে দুই গাড়ির সংঘর্ষ, নিহত ১

এক্সপ্রেসওয়েতে দুই গাড়ির সংঘর্ষ, নিহত ১

দক্ষিণ আফ্রিকাকে হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় ফেলে পাকিস্তানের ইতিহাস

দক্ষিণ আফ্রিকাকে হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় ফেলে পাকিস্তানের ইতিহাস

বিসিএস তথ্য ক্যাডারের বঞ্চিতদের মানববন্ধন আজ

বিসিএস তথ্য ক্যাডারের বঞ্চিতদের মানববন্ধন আজ

বিকেলে চালু হচ্ছে মোবাইল ইন্টারনেট

বিকেলে চালু হচ্ছে মোবাইল ইন্টারনেট